শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিংলংজার মো. ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত হোসাইনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের হাতে মারধরে আহত টমটম চালক এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত কিশোর আবদুর রহিম (১৬) ওই ইউনিয়নের  লিংকরোড বিসিক এলাকার মৃত শাকের উল্লাহর পুত্র। মারধরে আহত আবদুর রহিম পাঁচদিন পর সোমবার ভোর সাড়ে চারটায় বাড়িতে মারা যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কুদরত উল্লাহ সিকদার জানান, গত ৭ ফেব্রুয়ারি  আবদুর রহিমের টমটমে লেগে লিংক রোডের ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় টমটম চালক আবদুর রহিমেকে সদর উপজেলার পেছনে ডিককুলের গয়মতলী এলাকা থেকে গাড়িসহ ধরে আনা হয়। সেখানে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা মিলে তাকে বেদম প্রহার করে। টমটমটিও ভাংচুর আটকে রেখে আহত অবস্থায় চালক আবদুর রহিমকে ছেড়ে। পরে দু’দিন টমটমের মালিক দুই হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে টমটমটি ছাড়িয়ে আনেন।

নিহত আবদুর রহিমের মা তফুর বেগম জানান, আহত আবদুর রহিমকে টাকার অভাবে হাসপাতালে নিতে পারেননি। বাড়িতে রেখে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ানো হয়। এর মধ্যে খাওয়া-দাওয়া একদম করেনি আবদুর রহিম। শরীরের অবস্থাও আরো খারাপ হয়ে যায়। এক পা ও হাতে মারাত্মক ব্যথা ছিলো। একই সাথে বুকেও ব্যথা ছিলো। টাকা জোগাড় করে আজকালের মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এর মধ্যে তার মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে (০১৮২৩৫৩৫০৩৯) কয়েক বার কল করা হলেও কল ধরেননি মো. ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত হোসাইন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাঈন উদ্দী বলেন, ‘কিশোরটি শরীরে যে আঘাত রয়েছে তা মৃত্যু জন যথেষ্ট কারণ নয়। তারপরও কয়েকদিন আগে মারধরে মারা গেছে বলে পরিবারের সন্দেহ। পরিবারের সন্দেহের প্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বিস্তারিত কারণ ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে জানা যাবে।’

এদিকে এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাধারণ মহলে ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সবাই শিক্ষক নামে দানবদের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন।